July 3, 2024, 4:31 pm

টাকা দিয়েও স্থায়ী হলো না চাকরি, অবশেষে আত্মহত্যা করলেন ইউসুফ রানা

দর্শনা কেরু চিনিকল কারখানা বিভাগের একজন কর্মচারির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর্থিক লেনদেনসহ বেশ কয়েকটি কারণে আগেরদিন বাড়িতে ঝামেলা হওয়ায় ঘাসমারা ঔষধ খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে। রবিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়

এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায় দর্শনা হিজলগাড়ি গ্রামের তোরাব আলির ছেলে স্থানীয় সংগ্রাম হোটেল মালিক কেরু চিনিকলের কারখানা বিভাগের ম্যাংগাপ্যান হেলফার ইউসুফ রানা (৫০) দীর্ঘদিন মৌসুমি কর্মচারি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। এ বছর মিল কর্তৃপক্ষ মৌসুমি থেকে স্থায়ীকরণের সার্কুলার দিলে অন্যান্যদের সাথে তিনিও স্থায়ীকরণের আবেদন করেন। পরে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পরীক্ষা দেন। ১০৪ জন পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মধ্যে ইউসুফ রানার নাম থাকার কথা ছিল। কিন্তু পরে জানতে পারে লিস্টে তার নাম নেই।

এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজনের অভিযোগে জানা যায় যে, এনজিও থেকে ঋণ, নিজস্ব হোটেল ও পরিবার থেকে বেশ কিছু টাকা চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য দেয়া হয়েছিল। চাকরির ওয়েটিং লিস্টে ইউসুফ রানার নাম আছে বলে কেউ কেউ প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। গত দেড়মাস অতিবাহিত হলেও চাকরি তো দূরের কথা আসল টাকাও ফেরত পাননি তিনি।

দিনে দিনে ঋণের বোঝা বাড়তেই থাকে। ফলে নানামুখী ঝামেলার বিষয় নিয়ে গত দু-তিন দিন ধরে তার বাড়িতে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি অশান্তি সহ বড় রকমের ঝামেলা হয়। শনিবার সকালের দিকে নানান যন্ত্রণায় ইউসুফ রানা সহ্য করতে না পেরে সবার অজান্তে বাড়ির পাশে মাঠে গিয়ে ঘাসমারা বিষপান করে। পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা দ্রুত তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রবিবার ভোরে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সে মারা যায়।

এ বিষয় বেগমপুর ইউপি সদস্য আলিকদর ও প্রতিবেশী জসিম বলেন মৃত ইউসুফ রানা কেরু চিনি কলে মৌসুমীর কর্মচারি ছিলেন চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে মোটা অংকের টাকা দেয়। এসব টাকা উদ্ধার করতে না পেরে বাড়িতে অশান্তির কারণে সে বিষপানে আত্মহত্যা করে।

কেরুর মহা-ব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন কুমার জানান ইউসুফ রানা বলে আমি কাউকে চিনি না। চাকরির বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে আছি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।

এ বিষয়ে কেরু এন্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

দর্শনা থানার ওসি জনাব বিপ্লব কুমার সাহা জানান, কেরুর কর্মচারি ইউসুফ রানার বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল থেকে আমাদের একটি ম্যাসেজ দিয়েছিল। মৃত্যুটি স্বাভাবিক নয়। আমরা একটি মামলা করে ফরওর্য়াডিং করে রাজশাহী পাঠিয়ে দিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :