July 4, 2024, 2:27 am

মেহেরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ভারতীয় নারীর মৃত্যু

মেহেরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ভারতীয় নারীর মৃত্যু
জীবনের শেষ সময়টুকু পরিবারের স্বজনদের সাথে কাটাতে চেয়েছিলেন ইস্তাফন খাতুন (৬৪)। তার আগেই বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারালেন তিনি। গতকাল রবিবার (৩০ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে সীমান্তবর্তি নবীনগর খালপাড়া সীমান্তের ১১৬ নাম্বার মেইন পিলারের কাছে তারকাটা পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টাকালে ভারতের নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নিয়ে গেছে ভারতের অভ্যন্তরে।

নিহত ইস্তাফন খাতুনের বড় ভাই হাসেম আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মন মোহন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। তাই এবিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছুই যানাইনি।

নিহত ইস্তাফন খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার শালিকা গ্রামের মৃত কোমর আলীর মেয়ে।

নিহত ইস্তাফন খাতুনের বড় ভাই হাসেম আলী, ৩০ বছর আগে আমার বোন ভারতে পারি জমান। ভারতের বিহারের একটি শহরে বাসিন্দা রহমত আলীর সাথে বিয়ে করে বসবাস করে আসছিলেন। সে ওই দেশের নাগরিক হয়েছেন। কিছুদিন আগে তার স্বামী রহমত আলী মারা গেছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর ইস্তাফন খাতুন একাকি জীবন ধারণ করছিলেন। কয়েক সপ্তাহ আগে সীমান্তের তারকাটা পার হয়ে আমাদের বাড়িতে কয়েক সপ্তাহ থেকে আবারও ফিরে গেছেন। সেখানে এখন তার দেখা শুনার কেউ নেই। বাকি জীবনটা আমাদের পরিবারে সাথে কাটানোর কথা তার।

তারকাটা পার হওয়ার জন্য গত তিন দিন সীমান্তের ওপারে ভারতের নদীয়া জেলার তেহট্র থানার নবীনগরে অবস্থান করছিলেন তিনি। রবিবার দিবাগত রাতে আমাদের সাথে তার শেষ কথা হয় মুঠোফোনে। বলেছিলেন সুযোগ পেলেই তারকাটা পার হবো। তোমরা জেগে থেকে। মধ্যরাতে খবর পাই তারকাটা পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ কালে বাংলাদেশী ভেবে তাকে নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পে সদস্যরা ভারতের অভ্যন্তরে গুলি করে হত্যা করেছে। পরে তার মরদেহ নদীয়া জেলার তেহট্র থানার ৮৪ নং বিএসএফ ব্যাটেলিন নাটনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। বোনের মৃত্যুর খবরে সীমান্তে ছুটে গিয়েও তার মৃত দেহের দেখা মেলেনি পরিবারের।

তিনি আরো বলেন, জীবনের শেষ সময় টুকু কাটাতে চেয়েছিলেন পরিবারে ভাই বোনদের সাথে। সে আশায় গত দেড় বছর যাবত চেষ্টা করেও আসতে পারেনি নিজ দেশে।

নিহতের ভায়ের ছেলে বিপ্লব হোসেন জানান, গত তিন দিন ধরে ওপারের নবীণনগর গ্রামের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন ফুপু। ফোনে তার সাথে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে কথা হয়। পরে ভারত থেকে মোবাইল ফোনে জানতে পারি বিএসএফ এর গুলিতে মারা গেছেন ফুফু। লাশ ফিরে পেতে আমরা বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করি। কিন্তু ভারতীয় অভ্যন্তরে ঘটনাটি ঘটনায় বিজিবি কোন ভাবে লাশ পাওয়ার আশা দিতে পারেনি।

সীমান্তে নিহতের ঘটনায় বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মন মোহন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খালপাড়া সিমান্তে নিহতের ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছু জানাইনি। নিহত নারীর জন্ম বাংলাদেশে তার ভাই সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা সীমান্তবর্তি গ্রাম শালিকাতে বসবাস করেন। ধারনা করা হচ্ছে তাদের কাছে অবৈধ ভাবে আসতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :