আমন চাষে লোকসানের শঙ্কা কৃষকেরঋতু চক্রের হিসেবে চলছে বর্ষা মৌসুম। আষাঢ় মাস শেষে শ্রাবণ দুয়ারে। তারপরও বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশে উড়ছে শরতের মেঘ আর অনুভূতিতে চৈত্রের গরম। আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃষ্টির সুখবর দিতে পারছে না। এদিকে, চাহিদামতো বৃষ্টিপাত না থাকায় আমন ধান চাষ নিয়ে কৃষকের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির আশায় না থেকে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকায় সেচের ব্যবস্থা করে ধান রোপণের প্রস্তুতি শুরু করেছেন অনেকে।
যশোর বিমান বন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত পহেলা জুলাই থেকে ১৪ জুলাই রাত ৯ টা পর্যন্ত জেলায় মাত্র ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ সময় প্রায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে।
বর্ষা মৌসুমের পুরো একটি মাস পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির যেমন দেখা নেই তেমনি প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠছে জনজীবনে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছেন কৃষক।
সদর উপজেলার কায়েতখালি গ্রামের ছবেদ মোল্লা বলেন, বোরো চাষে তার ব্যাপক লোকসান হয়েছে। সেই লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে জ্যৈষ্ঠের শেষে আমন চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেন তিনি। সময় হয়েছে চারা রোপণের। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের চারা রোপণের জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করতে পারছেন না। শ্রমিক দিয়ে সব কাজ করাতে হয়, আট-নয় বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে আমন চাষ করতে হলে লোকসানই হবে।
বাঘারপাড়ার কৃষক মধুসূদন দেবনাথ, চৌগাছার শহিদুল হোসেনসহ আরও কয়েকজন জানান, অন্যান্য বছর মধ্য আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবন মাস পর্যন্ত আমন ধান জমিতে রোপণ করা হয়। বর্ষাকালে বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে কৃষক প্রকৃতিনির্ভর রোপা আমন চাষ করেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে এ মৌসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা না মিললেও এবারের মতো বৃষ্টিহীন অবস্থা হয়নি। সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেকের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। আবার কারো কারো চারা তৈরি থাকলেও পানির অভাবে সেই চারা জমিতে লাগাতে পারছে না। কেউ কেউ স্যালোমেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করছেন। আবার এখনো অনেকে বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক নূরুজ্জামান বলেন, এখনো পর্যন্ত দু’সপ্তাহ সময় রয়েছে আমন ধান রোপণের জন্য। অগ্রিম চাষাবাদে আগ্রহী কৃষকরা ইতিমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সেচের মাধ্যমে ধান রোপণ করছেন। তবে, এখনো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দু’সপ্তাহের মধ্যে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হলে সেক্ষেত্রে আমন চাষে সেচের জন্য কৃষকের বাড়তি অর্থ খরচ করতে হতে পারে। আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, এটি মূলত বিগত বছরের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
Leave a Reply