April 27, 2024, 7:42 pm

বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিল আরও ৪ জন

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের বাসে টাঙ্গাইলে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলার ১০ আসামির মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি ছয়জনকে পাঠানো হয়েছে রিমান্ডে।

মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয় আসামিদের। আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত ছয় আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মেদ বলেন, পৃথক পৃথকভাবে অন্য ৪ আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাতের কাছে আসামি আসলাম, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ্রের কাছে আসামি রাসেল তালুকদার, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের কাছে আসামি আলাউদ্দিন ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলামের কাছে আসামি নাঈম সরকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালতের বিচারকদ্বয় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে আসামিদের জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের (উত্তর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলায় ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যা ব। সোমবার রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের কাছে আসামিদের হস্তান্তর করে র্যা ব সদস্যরা। পরে মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ছয় জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অপরদিকে অন্য চারজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে পৃথক পৃথকভাবে চারজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ৪ আসামি হলো— আলাউদ্দিন (২৪), নাঈম তালুকদার (১৯), রাসেল তালুকদার (৩২) ও আসলাম তালুকদার রায়হান।

ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
রিমান্ডে পাঠানো আসামিরা হলো— মূল পরিকল্পনাকারী টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মজিবুর রহমানের ছেলে রতন হোসেন (২১), সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার হাসমত আলী দিপু (২৩), বাবু হোসেন জুলহাস (২১), জীবন প্রামানিক (২১) ও আব্দুল মান্নান (২২)।

এর আগে এই মামলায় রাজা মিয়া (৩২), আব্দুল আওয়াল (৩০) ও নুরনবীকে (২৬) টাঙ্গাইল পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতে তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় মোট ১৩ জন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭ আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশি কয়েক জন ডাকাত বাসে ওঠে। বাসটি টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা যাত্রীদের হাত, পা, চোখ বেঁধে তাদের সব মালামাল লুট করে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। ডাকাতরা বাসটি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দিকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসটি মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে রাস্তার খাদে নামিয়ে দেয় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করে। পরে পুলিশ আসলে যাত্রীরা ডাকাতি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে (৩ আগস্ট) মধুপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :