May 7, 2024, 12:41 am

কালীগঞ্জে ভাংড়ি ব্যবসায়ীকে আটকের ভয় দেখিয়ে এসআই নিল ৪৫ হাজার টাকা

শাহ আলম, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ): 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাংড়ি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও আটকের ভয় দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। গত ২১ মার্চ ঘটনাটি ঘটলেও তিনি ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম কালীগঞ্জ শহরের পৌরসভার সামনে পুরাতন জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বেশ আতংকে রয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ফরিদুল ইসলাম বলেন,  গত ২১ মার্চ ২৫০ টাকায় একটি পুরাতন বাইসাইকেল ওজনে ক্রয় করেন তিনি। পরে কালীগঞ্জ থানার এস আই সিরাজ তাকে ফোন দিয়ে বলেন তোমার কাছে ভাঙ্গা কোন সাইকেল আছে। তিনি উত্তরে বলেন, একটা ছেলে বিক্রয় করেছে। সাইকেলটি আছে। এর পরে এসআই মাখন তাকে ফোন দিয়ে বলেন, সন্ধ্যার পর সাইকেলটি আমাদের কাছে দিয়ে যাবেন। পরে সন্ধ্যার দিকে এস আই প্রতিকসহ কয়েকজন পুলিশ এসেছিল। এ সময় ওসির এক ভাই ও ছিল। ইফতারের পর হওয়ায় দোকানে তিনি ও তার ছেলে ছিলেন। দোকান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি স’মিলে নিয়ে যান এসআই প্রতিক। তখন এসআই প্রতিকে তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখান। ওসি আপনার নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবে। তুমি চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে আছো। তোমাকে টেনে-হেঁচড়ে থানায় নিয়ে যেতে বলেছে ওসি স্যার। 

তিনি বলেন, একপর্যায়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই প্রতিক। এর দুই মিনিট পরে ওসির ভাই (জুম্মন- ওসির বন্ধু) পরিচয় দেওয়া একজন ৩০ হাজার টাকা দিতে বলেন। এরপর কথা বললেই টাকার পরিমাণ বেড়ে যায়। পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা। তিনি মানসম্মান বঁাচাতে সাথে সাথে ৩০ হাজার টাকা এসআই প্রতিককে দেন ও পরের দিন ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। আমাকে ব্লাকমেইল করে টাকাগুলো নিয়েছে। পরে সেই সাইকেলও নিয়ে যায় পুলিশ।

ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি দীর্ঘদিন এই ভাংড়ি ব্যবসায়ীর সাথে জড়িত। তার এই দোকানে ৩০ জনের বেশি কাজ করে। তারা সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে পুরাতন প্লাস্টিক ও লোহার জিনিসপত্র কিনে আনে। সেটা তার কাছে বিক্রি করে চলে যায়। তিনি কোন চোরাই সিন্টিকেটের সাথে জড়িত না। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার দোকানে পুলিশ এসে বসে। বিভিন্ন তথ্য জানতে চায়। তিনি তাদের আপ্যায়নসহ তথ্য দিয়েও সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তার সাথে এমন ব্যবহার করবে সেটা তিনি ভাবতে পারেননি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই প্রতিক কুমার মুঠোফোনে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। কথার একপর্যায়ে বলেন, ব্যবসায়ী ফরিদুল একটা চুরি যাওয়া সাইকেল কিনেছিলেন। সেই সাইকেল উদ্ধার করে তাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এখন ডিউটিতে আছি। পরে আপনার সাথে দেখা করবানে। 

কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ জানান, বিষয়টি শুনে তিনি ভাংড়ি ব্যবসায়ী ফরিদুলকে থানায় ডেকেছিলেন। ওই ব্যবসায়ী আগামী ৩০ তারিখে বিস্তারিত কথা বলবেন। তবে পুলিশের কেউ টাকার লেনদেন করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার সাথে এক বন্ধু থাকে, ভাই না। সে প্রতিকের সাথে ওইদিন যায়নি বলেও দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :