বিবেক রায় কলকাতা,সংবাদদাতা :
নদিয়া জেলার রানাঘাট থানার অন্তর্গত আনুলিয়া গ্রাম | পাশে বহে চলেছে চূর্ণী নদী। এই গ্রামেই জন্মেছিলেন রবি ঠাকুরের প্রথম সঙ্গীত শিক্ষাগুরু বিষ্ণু চক্রবর্তী। সাহিত্যিক , মানবদরদী , প্রতিশ্রুতিবান কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় ও এই গ্রমেরই মানুষ ।
। সব ধর্মের মানুষের বসবাস , শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান । রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ চোখে পড়ার মতো। এমনই একটি গ্রামে তিনশত বৎসরের বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছেন বিষ্ণু দেবতা বাসুদেব। চৈত্র সংক্রান্তিতে গাজন উৎসব পালিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। সর্ব ধর্মের মানুষ মিলিত হন সেই উৎসবে।
কিছুদিন পূর্বে বিপ্লব রায় নামে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ঐ প্রাচীন মূর্তি তুলে নিয়ে যেতে আসেন স্থানীয় প্রশাসন সাথে নিয়ে।
দলমত নির্বিশেষে সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেন নি। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান মিঃ রায়।
মিডিয়ায় প্রচারিত হয় , গ্রামের মানুষ এক সপ্তাহ পর ঐ ব্যক্তির হাতে মূর্তিটি তুলে দেবেন। খবর টি ভিত্তিহীন ও অসম্মানজনক । এও প্রচারিত হয়েছে – স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তিনি এই গ্রামেরই মেয়ে তাঁকেও কড়া ভাষায় আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন যা ক্ষমাহীন অপরাধ বলেই মনে করছেন জনসাধারণ। গোপনসূত্রে খবর ছিল গতকাল অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি তিনি আবারো পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসবেন এবং মূর্তি তুলে নিয়ে যাবেন।
এই সংবাদ প্রচারিত হতেই গ্রামের মানুষ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ICHFR এর স্মরণাপন্ন হন। এবং সাথে সাথে সংস্থার মহাসচিব শ্রী সংগ্রাম মিত্র ও ন্যাশনাল কমিটির কনভেনর ল’সেলের মিটিং করেন এবং গ্রামবাসিদের সাথে ভারচ্যুয়ালি দফায় দফায় মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা আনুলিয়া যাবেন। রবিবার শ্রী সংগ্রাম মিত্রের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আনুলিয়া গ্রামে উপস্থিত হন । উপস্থিত ছিলেন পার্থ মুখার্জি ন্যাশনাল কনভেনর , নদীয়া জেলার কনভেনর শ্রী তারাশঙ্কর ব্যানার্জি , শ্রী নন্দ ভৌমিক , শ্রী তরুণ মন্ডল , সৌরভ মৈত্র , হাজি সাইফুল আলম মন্ডল , চিত্তরঞ্জন দাস সন্যাসী ,
তাঁরা সকলে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রতিবাদ সভা করেন গ্রামের মানুষদের নিয়ে। পশ্চিম বঙ্গ সরকারের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ আধিকারিক মাননীয় শ্রী নন্দ ভৌমিক বলেন যেখানে দেবত্ব সম্পত্তির উল্ল্যেখ রয়েছে সরকারি রেকর্ডে এবং তিনশো বছর ধরে পূজিত হচ্ছে যে দেবতা তা কি করে অবহেলিত হয় ? এবং তা তুলে নিয়ে যাওয়ার দুঃসাহস হয় কোথা থেকে ۔۔۔۔!! প্রবীণ মানুষজনদের সাথে কথা বলেন শ্রী সংগ্রাম মিত্র । তিনি গ্রামবাসীদের অভিনন্দন জানান যে তাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে অধিকার রক্ষার আন্দোলনে সাহস দেখিয়েছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করেন মানবাধিকার সম্মান প্রদানের মাধ্যমে। আগামী দিনে তাঁরা সম্পূর্ণ আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। তিনি আরো বলেন বৃহত্তর স্বার্থে গবেষণার কাজে যদি প্রয়োজন হয় গবেষণা এই গ্রামে এসেই করতে হবে। সংরক্ষণের নিঃশর্ত সাহায্য যদি করতে চান গ্রামের বিষ্ণু ( বাসুদেব ) রক্ষা কমিটির মাধ্যমেই করতে হবে।
শ্রী পার্থ মুখার্জী তিনিও স্পষ্ট বক্তব্যে বলেন কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে তা হতে দেবো না।
এই প্রতিবাদ সভা ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানান। গ্রামের মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন্য তাঁরা গর্বিত। গ্রামবাসীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ۔۔শ্রী রাম ঘোষ , শ্রী পার্থ ঘোষ , শ্রী দিলীপ নাথ , শ্রী কমল ঘোষ , শ্রী বিভূতি রায় ,আনন্দ ভট্টাচার্য , শ্রী অজয় ভট্টাচার্য , শ্রী সন্দীপ চ্যাটার্জী প্রশান্ত ঘোষ সহ শতাধিক মানুষ।।
Leave a Reply