April 27, 2024, 7:06 pm

কুমিল্লায় স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদন্ড

জেলার হোমনায় পরকীয়ার জের ধরে সৌদি প্রবাসী মো. আ. জলিলকে জবাই করে হত্যার দায়ে স্ত্রী শাহনেওয়াজ বেগমসহ চারজনকে মৃত্যুদন্ড এবং একজনকে খালাসের রায় প্রদান করেছেন। আজ কুমিল্লার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের মধ্যে কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কারারকান্দি গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে মো. কুদ্দুস মিয়া (৩২), একই উপজেলার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক আ. খালেক(২৮) ও একই উপজেলার কারার কান্দি গ্রামের মৃত সাধন মিয়ার ছেলে মো. রাজিব(২৬) এবং নিহতের স্ত্রী মোসা. শাহনেওয়াজ বেগম এবং বেকসুর খালাস প্রাপ্ত আসামি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার গোয়ারী ভাঙ্গা গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে মো. শাহ জাহান(৪২)।
মামলার বিবরণে জানা যায় যে পরকীয়ার জের ধরে আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সৌদি প্রবাসী ভিকটিম মো. আ. জলিলকে(৪৫) ঢাকায় চিকিৎসার করানোর কথা বলে ২০১৩ সালের ৯ জুন হতে ১০ জুন যেকোনো সময়ে কুমিল্লার হোমনা থানাধীন বাহেরখোলা গ্রামের কেরামত আলী ওরফে কেরার মাজার সংলগ্ন পাকা রাস্তার পশ্চিম পাশে নিয়ে ধারালো ছুরিকাঘাতে গলা কেটে জবাই করে হত্যার পর লাশ গুম করে।
নিহতের স্বজনরা হাসপাতাল ও আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে লোকমুখে জানতে পারে যে, কেরার মাজার সংলগ্ন পাকার রাস্তার পশ্চিম পাশে অজ্ঞাত নামা পুরুষের লাশ পড়ে আছে। তখন বাদী ঘটনাস্থলে গিয়ে তার বড়ভাই মো. আ. জলিলের লাশ শনাক্ত করেন এবং হোমনা থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন।
এ ব্যাপারে নিহতের ছোটভাই হোমনা থানাধীন চেৎপুর গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে মো. তাইজুল ইসলাম(৩৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামি করে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আব্দুল আল বাকী তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অত্র মামলার আসামি কুদ্দুছ, আ. খালেক, রাজিব ও মুল পরিকল্পনাকারী নিহতের স্ত্রী শাহনেওয়াজকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন।
ঘটনার তদন্তপূর্বক ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার গোয়ারী ভাঙ্গা গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে মো. শাহজাহান (৪২), একই উপজেলার কারারকান্দি উত্তর পাড়ার মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে মো. কুদ্দুস মিয়া (৩২), একই উপজেলার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক আ. খালেক (২৮) ও একই উপজেলার কারার কান্দি গ্রামের মৃত সাধন মিয়ার ছেলে মো. রাজিব (২৬) এবং নিহতের স্ত্রী মোসা, শাহনেওয়াজ বেগমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ১৪জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এবং আসামি রাজিব, শাহনেওয়াজ, আ. কুদ্দুস ও আ. খালেকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আ. কুদ্দুস, আ. খালেক, রাজীব ও শাহনেওয়াজকে মৃত্যুদ- ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং ১নং আসামি মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্র পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী এপিপি এডভোকেট মো. আবু ইউসুফ বলেন আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী সিনিয়র এডভোকেট মো. আ. হ. ম তাইফুর আলম বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :