April 28, 2024, 9:15 pm

জরায়ু টিউমার অপারেশন, ভুল করে মুত্রথলি কাটলেন চিকিৎসক

সুচিত্রা রায়, স্টাফ রিপোর্টার :

আশুলিয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর জরায়ু টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দেওয়ার মত ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। পরে ভুক্তভোগী রোগী দীর্ঘদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় নিয়ে আসা হয়।

ঘটনাটি গত মাসের ২৭ এপ্রিল। সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া ছয়তলা এলাকার “দি ল্যাব এইড” হাসপাতালে ঘটেছে। রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ভুল অপারেশনের বিষয়টি বুঝতে পারে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।

জানা যায়, রেজাউল সিকদারের স্ত্রী রহিমা বেগম (৪৫) এর জরায়ুতে সমস্যা দেখা দিলে গত মাসের ২৭এপ্রিল আশুলিয়ার ছয়তলা এলাকার “দি ল্যাব এইড” হাসপাতালে চিকিৎসার নিতে যান।

বিভিন্ন পরিক্ষার পর জরায়ু টিউমার অপারেশন করেন দি ল্যাব এইড হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ফৌজিয়া আক্তার। তবে অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ল্যাব এইড থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাপাতালে প্রেরণ করে। রোগী অবস্থা খারাপ হওয়ায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না রেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা।

এভাবেই এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের কেটে যায় ১৭দিন। খরচ হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা।

এদিকে ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ১৮দিনের মাথায় আরেকটি অপারেশন করেন। এই অপারেশনের পর চিকিৎসকরা জানান, আগের অপারেশনটি ভুল করে রোগীর মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দিয়েছে। ফলে রোগীর প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী রেজাউল সিকদার বলেন, বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা করে অপারেশন করতে হবে বলে ল্যাব এইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। এতে আমি রাজি হই। এরপর ডাঃ ফৌজিয়া আক্তার আমার স্ত্রীর জরায়ু টিউমার অপরেশন করেন। এসময় জরায়ু টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে ভুলবশত রোগীর মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দেন।

তার অভিযোগ, অপারেশনের পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারেন, সে ভুল অপারেশন করেছে। তবে একথা গোপন রেখেই রোগীকে দ্রুত ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

রেজাউল সিকদার বলেন, গত ২৭ এপ্রিল আমার স্ত্রী মোসাৎ রহিমা বেগম কে জরায়ুর টিউমার অপারেশনের জন্য আশুলিয়া জমগড়া ছয়তলা দি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ডাঃ ফৌজিয়া আক্তার আমার স্ত্রীর অপারেশন করে। রুগির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সোহরাওয়ার্দী থেকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে বলেন, এরআগে জরায়ু অপারেশন করতে গিয়ে মুত্রথলি কেটে অনত্র লাগিয়ে দিয়েছে। প্রায় ১৮ দিন প্রসাব বন্ধ থাকার কারণে আবার অপারেশন করানো হয়েছে।

রিজাউল সিকদার আরো বলেন, বর্তমানে আমার স্ত্রীর অবস্থা আংশঙ্কাজনক। এতে আমার প্রায় তিন লাখ ৫০হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি গরিব মানুষ । এখন আমার স্ত্রীকে বাকি চিকিৎসা করানো কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে “দি ল্যাব এইড”হাসপাতালের ব্যবস্থাপক পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, রোগীর স্বজনদের সাথে গত তিনদিন আগে আমাদের আপোষ মিমাংশা হয়ে গেছে। একটু ভুল বোঝাবুঝি তা ছাড়া কিছুই না।

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সায়েমুল হুদা বলেন, এধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে উক্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :