শারীরিক নির্যাতন, নাম ঠিকানা গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি অতঃপর মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের রহস্যজনক এক ঘটনা ঘটেছে যশোর শহরের রেলস্টেশনের ওভার ব্রীজের দক্ষিণ পাশে হিজড়া বাড়ির মোড়ে।
শারীরিক নির্যাতনে মৃত্য যুবকের নাম রিপন (৩০)। তিনি হিজড়া বাড়ি এলাকার মৃত রফিকের ছেলে। শারীরিক নির্যাতনকারীরা এলাকায় সূদ ও মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, এলাকার মাদক ও সুদ ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা গত ২১ মার্চ সন্ধ্যার পর পূর্বশত্রুতার জের ধরে পাশের রেল পুকুর পাড়ে রাস্তার উপর রিপনের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এসময় রিপন গুরুতর রক্তাক্ত জখম হলে সন্ত্রাসীরা তার নাম ঠিকানা গোপন করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ২২ মার্চ সন্ধ্যায় রিপনের মৃত্যু হলে সন্ত্রাসীরা গোপনে রাতের আঁধারে হাসপাতাল থেকে তার লাশ রিলিজ করে আনে এবং ২৩ মার্চ জোহরবাদ চাঁচড়া কবরস্থানে দাফন করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গ্রামের কাগজকে জানান, নিহতের পরিবার শারীরিক নির্যাতন, মৃত্যু, তড়িঘড়ি লাশ দাফন ও নাম ঠিকানা গোপন করার সবকিছুই প্রত্যক্ষ করলেও জীবনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এ ঘটনায় থানা পুলিশকে জানাতে পারছে না নিহতের পরিবার। তারা আরো বলেন, লাশ দাফনের পূর্বে গোসলের সময় নিহত রিপনের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখেছে তারা। মাদক বিক্রেতা ও সুদ খোর সন্ত্রাসীরা এতই ভয়ংকর যে এলাকাবাসী মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
নিহতের পরিবার আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে গ্রামের কাগজকে জানান, নিহত রিপনদের হিজড়া বাড়ির পিছনে ১২ থেকে ১৪ শতক জমির উপর একতলা একটি বাড়ি রয়েছে। যে বাড়িটি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে কেনার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে আসছে। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার তা বিক্রি করতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাদক ব্যবসায়ী চক্র। ষড়যন্ত্র আটতে থাকে কিভাবে ওই পরিবারকে শায়েস্তা করা যায়। এরই জের ধরে সন্ত্রাসীরা রিপনের উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রামের কাগজের পক্ষ থেকে তথ্যনুসন্ধানে যশোর জেনারেল হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ভর্তি রেজিস্টার তল্লাশী করে রিপন নামে কোন রোগীর নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে, সন্ত্রাসীরা তার নাম ঠিকানা গোপন করে ভিন্ন নামে স্বাভাবিক রোগী দেখিয়ে ভর্তি করেছে। নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, পুলিশ এগিয়ে আসলে তারা ঘটনার সব কিছু খুলে বলতেন। কারন সন্ত্রাসীরা তাদের উপর কড়া নজরদারি রেখেছে তারা যেন কোন প্রকার মুখ না খুলতে পারে। এলাকাবাসীও পুলিশি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply