May 1, 2024, 7:44 pm

৪ ছেলে, ৬ মেয়ে ও ৪ স্ত্রী থাকলেও মৃত্যুকালে কাউকে পাশে পেলেন না বৃদ্ধ

৪ ছেলে, ৬ মেয়ে ও ৪ স্ত্রী থাকলেও কেউ ছিল না তার সঙ্গে। তাই একাই একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকতেন সিরাজ উদ্দিন (৬৫)।

গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের হালসা গ্রামের ওই ঝুপড়ি ঘর থেকে বৃদ্ধ সিরাজ উদ্দিনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিরাজ উদ্দিন ওই এলাকার মৃত সামসু মোল্লার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ১০ ছেলে-মেয়ে ও ৪ স্ত্রী অন্যত্র থাকায় সিরাজ উদ্দিন তার প্রথম স্ত্রী জয়নবের বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীরা তাকে দেখভাল না করায় অন্যের কাছে হাত পেতে নিজের পেট চালাতেন তিনি।

শনিবার সকালে তার বাড়ির পাশে চলাচলের সময় দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা। দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা বন্ধ ঘরে প্রবেশ করে দেখে সিরাজ উদ্দিনের অর্ধগলিত মরদেহ পড়ে আছে। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধারণা, দুই থেকে তিন দিন আগে সিরাজ উদ্দিন মারা গেছেন।

খবর পেয়ে দুপুরে ঢাকা থেকে সিরাজ উদ্দিনের বড় স্ত্রী জয়নবের দুই মেয়ে ওই বাড়িতে আসেন। ২ মেয়ে মর্জিনা ও আর্জিনা দাবি করেন, তারা নিয়মিত তার বাবার কাছে টাকা পাঠাতেন এবং সিরাজ উদ্দীনকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু তার বাবা ভীষণ জেদি ছিলেন। তিনি কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাননি বলেই ছেলে-মেয়েদের কাছে যাননি।

হালসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, সকালে হালসায় এক বৃদ্ধের অর্ধগলিত মরদেহ পড়ে আছে এমন খবরে সেখানে যান। তিনি জানান, এর আগে বিভিন্ন সময় সমস্যা নিয়ে সিরাজ তার কাছে গেছেন এবং সাহায্য সহযোগিতা নিয়েছেন। এতগুলো বিয়ে করা স্ত্রী, এতোগুলো সন্তান থাকতেও তার এমন করুন মৃত্যুতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে নাটোর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অপুষ্টি ও বার্ধক্যজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করেনি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :