থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্‌যাপন সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা

Padma Sangbad

মুফতি মাহমুদুল হক জালীস।
ইসলাম হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে একমাত্র মনোনীত ধর্ম। যাতে রয়েছে মানুষের মুক্তি ও হেদায়াতের বিধান। ইসলাম কখনই অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা প্রশ্রয় দেয় না। অন্য ধর্মের সংস্কৃতি-উৎসব পালন মুসলমানের জন্য বৈধ মনে করে না।
এ জন্যই থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্যাপন ইসলাম সমর্থন করে না। নিজ ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের কালচার গুলিয়ে একাকার করতে ইসলাম নিষেধ করে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখে সে সেই জাতিরই অন্তর্ভুক্ত। ’ মিশকাত।
থার্টিফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে যেসব কার্যক্রম চলে ইসলাম তা সমর্থন করে না। জায়েজ মনে করে না কারণ সে রাতে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার মহোৎসব চলে। যুবতীরা আঁটসাঁট, অশালীন ও নগ্ন পোশাক পরিধান করে অবাধে চলাফেরা করে।
ইসলাম এগুলো সমর্থন করে না। এ প্রসঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ওইসব নারী যারা হবে পোশাক পরিহিতা কিন্তু নগ্ন। যারা পরপুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধবিশিষ্ট উটের মতো। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। ’ মুসলিম।
থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে দেখা যায় বিভিন্ন কনসার্টের আয়োজন। যেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে গানবাজনা, নগ্ন নৃত্য করে। যা ইসলাম সমর্থন করে না।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘একশ্রেণির লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গুমরাহ করার উদ্দেশ্যে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং এ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। ’ সুরা লুকমান, আয়াত ৬। থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে আতশবাজি ও পটকাবাজি চলে। আনন্দ উল্লাস করার জন্য মধ্যরাতে শুরু হয় আতশবাজি ও পটকাবাজি। যা জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে। সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টদায়ক হয়। আবার অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিরও আশঙ্কা থাকে। তাই এসব পরিহার করা জরুরি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের কষ্ট দেয় তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। ’ সুরা আহজাব, আয়াত ৫৮।
থার্টিফার্স্ট নাইটের রাতে যুবক-যুবতীরা অবাধে মেলামেশা করে। দেখা যায় এ রাতে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, কমিউনিট সেন্টার, সমুদ্রসৈকত, নাইট ক্লাবগুলোয় অপকর্ম চলতে থাকে। অথচ ইসলাম এগুলো কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অবশ্যই কোনো পুরুষ কোনো নারীর সঙ্গে নির্জনে একত্রিত হলে তাদের তৃতীয় জন হয় শয়তান। ’ মিশকাত।
থার্টিফার্স্ট নাইটের রাতকে কেন্দ্র করে অনেক অর্থ অনৈসলামিক ও হারাম কাজে ব্যয় হয়; যা একদিকে মারাত্মক গুনাহের অন্যদিকে অপচয়। ইসলাম অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের বড়ই অকৃতজ্ঞ। ’ সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৭। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের কর্তব্য থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে বিরত থাকা। সে রাতকে কেন্দ্র করে সব ধরনের অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হইহুল্লোড় ও নগ্নতা প্রদর্শন এড়িয়ে চলা।
লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Update Time : ১২:৪৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্‌যাপন সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা

Update Time : ১২:৪৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

মুফতি মাহমুদুল হক জালীস।
ইসলাম হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে একমাত্র মনোনীত ধর্ম। যাতে রয়েছে মানুষের মুক্তি ও হেদায়াতের বিধান। ইসলাম কখনই অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা প্রশ্রয় দেয় না। অন্য ধর্মের সংস্কৃতি-উৎসব পালন মুসলমানের জন্য বৈধ মনে করে না।
এ জন্যই থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্যাপন ইসলাম সমর্থন করে না। নিজ ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের কালচার গুলিয়ে একাকার করতে ইসলাম নিষেধ করে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখে সে সেই জাতিরই অন্তর্ভুক্ত। ’ মিশকাত।
থার্টিফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে যেসব কার্যক্রম চলে ইসলাম তা সমর্থন করে না। জায়েজ মনে করে না কারণ সে রাতে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার মহোৎসব চলে। যুবতীরা আঁটসাঁট, অশালীন ও নগ্ন পোশাক পরিধান করে অবাধে চলাফেরা করে।
ইসলাম এগুলো সমর্থন করে না। এ প্রসঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ওইসব নারী যারা হবে পোশাক পরিহিতা কিন্তু নগ্ন। যারা পরপুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধবিশিষ্ট উটের মতো। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। ’ মুসলিম।
থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে দেখা যায় বিভিন্ন কনসার্টের আয়োজন। যেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে গানবাজনা, নগ্ন নৃত্য করে। যা ইসলাম সমর্থন করে না।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘একশ্রেণির লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গুমরাহ করার উদ্দেশ্যে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং এ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। ’ সুরা লুকমান, আয়াত ৬। থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে আতশবাজি ও পটকাবাজি চলে। আনন্দ উল্লাস করার জন্য মধ্যরাতে শুরু হয় আতশবাজি ও পটকাবাজি। যা জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে। সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টদায়ক হয়। আবার অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিরও আশঙ্কা থাকে। তাই এসব পরিহার করা জরুরি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের কষ্ট দেয় তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। ’ সুরা আহজাব, আয়াত ৫৮।
থার্টিফার্স্ট নাইটের রাতে যুবক-যুবতীরা অবাধে মেলামেশা করে। দেখা যায় এ রাতে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, কমিউনিট সেন্টার, সমুদ্রসৈকত, নাইট ক্লাবগুলোয় অপকর্ম চলতে থাকে। অথচ ইসলাম এগুলো কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অবশ্যই কোনো পুরুষ কোনো নারীর সঙ্গে নির্জনে একত্রিত হলে তাদের তৃতীয় জন হয় শয়তান। ’ মিশকাত।
থার্টিফার্স্ট নাইটের রাতকে কেন্দ্র করে অনেক অর্থ অনৈসলামিক ও হারাম কাজে ব্যয় হয়; যা একদিকে মারাত্মক গুনাহের অন্যদিকে অপচয়। ইসলাম অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের বড়ই অকৃতজ্ঞ। ’ সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৭। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের কর্তব্য থার্টিফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে বিরত থাকা। সে রাতকে কেন্দ্র করে সব ধরনের অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হইহুল্লোড় ও নগ্নতা প্রদর্শন এড়িয়ে চলা।
লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।