মোঃ আব্দুর রহমান অনিক।।
দর্শনা রেলবাজারে শহর ও গ্রামগঞ্জ থেকে এসে হরেক রঙ্গের রঙিন মুরগির বাচ্চা
ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছে নারী -পুরুষ ।
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় গত দুই দিন ধরে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে কৃত্রিম রং করা মুরগির বাচ্চা ।
চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে নাদুস-নুদুস ছোট-ছোট গোলাপি, লাল, নীল, হলুদ ও সবুজের বাহারি রঙের এই মুরগির বাচ্চা। দেখেই পছন্দ করে ঝটপট কিনেও নিচ্ছেন অনেকে।
পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা বিভিন্ন রং করে বিদেশি মুবোম্বাই উন্নত জাতের বাচ্চা বলে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থ। দেখতে সুন্দর হওয়ায় বেশি দামে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতা। এদিকে সাধারণ মুরগির বাচ্চা বিভিন্ন রং করে বিক্রি করা প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। আর এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোট-ছোট লাল নীল ও সবুজের বাহারি রঙের এই মুরগির বাচ্চা আসলে মুরগির নতুন কোনো জাত নয়। সাধারণ লেয়ার জাতেরই মুরগি। বিশেষ কায়দায় রঙ করা হয়েছে। দেখে আকর্ষণীয় মনে হওয়ায় কিনে নিচ্ছেন ক্রেতা। বিশেষ করে বাসায় শিশুদের জন্য কিনছেন তারা। তবে জেলার কোথাও এভাবে মুরগির বাচ্চা রঙ করার খবর পাওয়া যায়নি। মূলত ঢাকা বা দেশের অন্যকোনো এলাকায় সাধারণ লেয়ার জাতের সাদা মুরগির বাচ্চা বিভিন্ন রঙ করা হচ্ছে।
সাধারণ কক্ মুরগির বাচ্চার চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি হচ্ছে রঙ করা মুরগির বাচ্চা। প্রতিপিচ ২০ থেকে ৩০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় রঙ করা মুরগির বাচ্চা বিক্রির জন্য তা সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ আকৃষ্ট হয়ে বেশি দামে এই ব্রাউন কক্, হোয়াইট কক্ মুরগির বাচ্চা কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
হরেক রঙের কালারি মুরগির বাচ্চা বিক্রেতা পারভেজ হোসেন দৈনিক পদ্মা সংবাদ কে বলেন, বাচ্চাগুলো ঢাকা থেকে কিনে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। বাহারি রঙের মুরগির বাচ্চাগুলো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সৌখিন ব্যক্তি ও শিশুরা খুব পছন্দ করে। বিক্রি করতে বেগ পেতে হয় না। গড়ে প্রতিদিন ৩ শ থেকে সাড়ে ৩ শ বাচ্চা বিক্রি করা হচ্ছে । এগুলো সহজে মরে না। কারণ রানীক্ষেত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া আছে ।
তিনি আরো জানান, সাধারণ লেয়ার জাতের সাদা মুরগির বাচ্চা বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাতটি রঙে মুরগির বাচ্চাগুলো রঙ করা হয়ে থাকে। তবে গোলাপি, লাল, সবুজ, হলুদ ও নীল রঙের বাচ্চার চাহিদা বেশি। মুরগির বাচ্চাগুলোর গায়ের রঙ সর্বোচ্চ এক মাস পর্যন্ত থাকে।
দর্শনা পোর শহরের মোঃ রানা আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, এ রকম মুরগির বাচ্চা আগে কখনো দেখিনি। সত্যি এই বাচ্চাগুলোকে অদ্ভুত লাগছে। বেশ নাদুস-নুদুস। যদিও জানি রঙ করা, রঙ বেশি দিন থাকবে না তারপরেও দেখে অনেক ভালো লাগছে। পছন্দ হওয়ায় আমার ছোট ছেলের জন্য প্রতিটি ২০ টাকা করে ৪টা বাচ্চা কিনেছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, লাল-নীল বা সবুজ রঙের মুরগির বাচ্চাগুলো আসলে কোন জাতের তা আমার জানা নেই। আমার জানামতে এ ধরনের কোনো জাত নেই। যদি কেউ রঙ করে বিক্রি করে থাকে তবে এটা প্রতারণার শামিল। দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরে দর্শনা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন দর্শনা রেল বাজারে এসে স্থান পরিদর্শন করেন।।
Leave a Reply