July 27, 2024, 9:47 am

আটক জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে এমপি আনারের লাশ মিলতে পারে

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও এমপি আনারের বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিনের সহযোগী জিহাদ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। তাকে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ অঞ্চল থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩) জিহাদকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এমপি আনারের মৃতদেহ সন্ধান করতে চান তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
জিহাদ বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এপমি আনারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর তিনি মধ্য কলকাতায় লুকিয়ে ছিলেন। বৃহস্পতিবারেই কোনোভাবে বর্ডার পার হয়ে বাংলাদেশ চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল জিহাদের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জিহাদ অবৈধভাবে ভারতে এসেছিলেন। ৩০ এপ্রিল ভারতে প্রবেশের পর তিনি মুম্বাই চলে যান। যখন এমপি আনার কলকাতায় বরানগরের মন্ডলপাড়ায় গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তার আগেই জিহাদ মুম্বাই থেকে কলকাতায় চলে আসেন। এরপর নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে এমপি আনারের লাশ টুকরো টুকরো করেন কয়েকজন। পরে একে একে তারা নিউ টাউন ছাড়েন।
পুলিশের তথ্যমতে, জিহাদ নিউ টাউন থেকে লাগেজে করে লাশের অংশ বের করেন। পরে অপরজনের হাতে সেই ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে গা-ঢাকা দেন।
কীভাবে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছিল, তা এক প্রকার পরিষ্কার ঢাকা ও কলকাতা পুলিশের কাছে। রহস্য থেকে যায় মৃতদেহের অংশ কোথায় তা নিয়ে। জিহাদকে হাতে নিয়ে তাই তদন্ত করতে চায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, লাশ টুকরো করা সহজ এবং তা কোনো জলাশয়ে ফেলে দেওয়া কঠিন ব্যাপার নয়। কারণ নিউ টাউন সংলগ্ন বহু মাছ চাষের জলাশয় আছে। কিন্তু মানুষের মাথা অত সহজে টুকরো করা সম্ভব নয়। দুষ্কৃতকারীরা এমপি আনারের মাথা কোথাও দাফন করতে পারে অথবা লুকিয়ে রাখতে পারে। জিহাদকে নিয়ে তাই তদন্তে নামতে চলেছে রাজ্য পুলিশ।
অপরদিকে জিহাদ গ্রেপ্তারের পর জানা যাচ্ছিল, আক্তারুজ্জামানের দুই সহযোগী জিহাদ ও সিয়াম একই ব্যক্তি। অর্থাৎ জিহাদই ওরফে সিয়াম। তবে এখনই এ নিয়ে পুলিশ কিছু স্পষ্ট করেনি।
এছাড়া একটি লাল রঙের গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাড়ির নম্বর WB18 AA 5474, গাড়িটি ব্যক্তিমালিকানার। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল, এই গাড়িতে করেই একাধিকবার লাশের টুকরো নিউ টাউন থেকে সরানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ওই গাড়ি হত্যাকাণ্ডের কাজে ব্যবহৃত, তা নিশ্চিত পুলিশ।
মূলত এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে চার ধরনের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল। পুলিশের মতে, গোপালের বাড়ি থেকে সাদা রঙের সুইফ ডিজায়ার ব্যবহার করে এমপি আনার কলকাতার নিউমার্কেটে যান। এরপর সেখান থেকে আরও একটি গাড়ি করে নিউ টাউনে যান। পরে নিউ টাউন থেকে একটি লাল গাড়িতে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের অভিজাত আবাসনে যান। তাকে হত্যার পর আরও একটি কালো গাড়ি ব্যবহার হয়েছিল। সিসিটিভিতে এমনই তথ্য মিলেছে পুলিশের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :