June 24, 2024, 5:49 pm

এবার চাকরিচ্যুত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষকের

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার আশিয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম সাজ্জাদুল হককে (সবুজ) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

অবশেষে চাকরিচ্যুত হলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী রেজা স্বাক্ষরিত আদেশে গত মঙ্গলবার (৪ জুন) তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

এর আগে গত ৩১ মার্চ প্রতারণা মামলায় কারাগারে যাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তিনি সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান খাঁন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় প্রথমে শিক্ষক সাজ্জাদুল হককে শোকজ করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে ঘটনা তদন্ত করে শিক্ষা বিভাগ। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। যথা সময়ে শোকজের জবাব ও তদন্ত চলাকালে লিখিত বক্তব্যও পেশ করেননি তিনি। সরেজমিন তদন্তে অসদাচরণ ও চাকরিবিধি লঙ্ঘনের ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়।

চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়েছে, বারহাট্টা উপজেলার আশিয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম সাজ্জাদুল হকের (সবুজ) বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) বিধি অনুসারে ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজুপূর্বক অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রেরণ করে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি লিখিত জবাব যথাসময়ে দাখিল করেন নাই এবং ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করেননি।

তার (সাজ্জাদুল হক) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত ব্যক্ত করে।

উক্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) (ঘ) বিধি অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক ২য় কারণ দর্শানো নোটিশ তার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং তার ব্যক্তিগত ই-মেইলে প্রেরণ করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি লিখিত জবাব দাখিল করেননি।

যেহেতু, ১ম কারণ দর্শানো নোটিশের বিলম্বে প্রাপ্ত তার লিখিত জবাব, তদন্ত প্রতিবেদন, সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা ও পারিপার্শ্বিক সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে বিধি অনুযায়ী চাকুরি হতে বরখাস্তকরণ’ গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

তাই প্রধান শিক্ষক এস এম সাজ্জাদুল হককে (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্তকৃত) বিধি অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ গুরুদণ্ড প্রদান করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাজ্জাদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। কয়েক বছর আগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ করার কারণে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। সেবার অনেক কিছু মাফ পেয়েছিলেন। এবার নির্বাচনী প্রচারণাসহ চাকরিবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করে সাজ্জাদুল হক নির্বাচনী আচরণবিধি ও সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন। শোকজ করার পর তিনি কোনো জবাব দেননি। পরে বিভাগীয় মামলা হওয়ার পরও তিনি শুনানিতে হাজির হননি ও কোনো বক্তব্য বা জবাবও দেননি। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তিনি (সাজ্জাদুল হক) উপজেলা-জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কারও ডাকে সাড়া দেননি। কাউকেই তিনি পাত্তা দেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :