April 17, 2024, 4:12 am

ভোজ্য তেলের সংকটে বিপাকে সাধারণ মানুষ

তুষার আহাম্মেদ।। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ভোজ্য তেলের দাম । আর এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা । সমগ্র জেলা জুড়ে ভোজ্যতেলের গভীর সংকট দেখা দিয়েছে । দোকানে গিয়ে পাওয়া যাচ্ছেনা তেল । আবার কিছু দোকানে তেল মিললেও বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে । এমতাবস্থায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ । কেউ কেউ বাধ্য হয়ে নতুন বাড়তি দামে তেল কিনছেন , আবার কাউকে তেল না কিনে খালি হাতে ফিরতে দেখা গেছে । সরকার কর্তৃক গত বৃহস্পতিবার ( ৫ মে ) সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে । এখন থেকে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৯৮ টাকায় । আর ৫ লিটারের বোতলের দাম হবে ৯৮৫ টাকা । এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকায় বিক্রি হবে । গতকাল জেলা শহরের প্রধান বাজার দোকান ঘুরে দেখা গেছে , ১ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে দাম লেখা আছে ১৬৮ টাকা । কিন্তু আদায় করা হচ্ছে ১৯৮ টাকা । অথচ নতুন দামের তেল এখনো বাজারে আসেনি । এভাবে ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে ৭৬০ টাকা মূল্য লিখা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ৯৮০ টাকা । আবার কোন কোন দোকানে তেল কিনতে দেয়া হচ্ছে শর্ত । ক্রয় করতে বাধ্য করা হচ্ছে অন্যান্য পণ্য । তেল কিনতে গিয়ে ঘরে থাকার পরও অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে । ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানিয়েছে , ভোজ্যতেলের মূল্যে বৃদ্ধির আশায়ব্যবসায়ীরা তেল বিক্রি না করে যার কাছে যে তেল রয়েছে তা দোকান থেকে সরিয়ে অন্যত্র মজুদ করে রেখেছে । যে কারণে ক্রেতারা সয়াবিন তেল কিনতে পারছে না । এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ জনগণ । সদর রোডের খাবার হোটেল ব্যবসায়ী মারুফ বলেন , প্রতিদিনের মতো আজও তেল কিনতে গিয়ে পড়েছি বিপাকে । সয়াবিন তেলের দাম যাই হোক হোটেল চালাতে তেল তো আমার লাগবে । তাই আমি পরিচিত দোকানিদের কাছ থেকে পাঁচ লিটারের একটি বোতল ৮৬৫ টাকায় নিয়েছি ; যা রোববারও ছিল ৭৮০ টাকা । ক্রেতা মফিজুল ইসলাম বলেন , প্রতিটি দোকানে সয়াবিন তেল রয়েছে । কিন্তু কেউ বিক্রি করছে না । কেউ দাম বাড়িয়ে বললে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা । আমি ১৬০ টাকার লিটারের তেল ২০০ টাকা করে দুই লিটার কিনেছি । বাজার রোডের মুদি দোকানি শামসুর রহমান বলেন , কোনো তেল নেই । কোম্পানি থেকেই সাপ্লাই নেই । আমরা বিক্রি করব কিভাবে । আমি দোকানে কোনো তেল মজুদ করিনিব্যবসায়ী মন্টু বলেন , তেল থাকলে তো বিক্রি করব । তেলই নাই । কিছু লাভের আশায় ক্রেতাদের ভোগান্তি করে তো লাভ নেই । ব্যবসায়ী মো . মারুফ বলেন , এক লিটারের একটি বোতল আর আধা লিটারের কয়েকটি বোতল রয়েছে আমার দোকানে । কিন্তু এগুলো সবই বিক্রি হয়ে গেছে , এক ব্যক্তি কিনে রেখে গেছেন । পাইকারী দোকানে গিয়ে দেখা গেছে , সব পণ্য সাজিয়ে রাখা হলেও কেবলই নেই সয়াবিন তেল । অথচ কয়দিন আগেও দোকানের সম্মুখদিকের জায়গায় সারিবদ্ধভাবে রাখা সাজিয়ে রাখা হতো ভোজ্যতেল । সয়াবিন তেলের কথা জিজ্ঞেস করতেই দোকানের কর্মচারী জানালো তেল নেই । অন্য একটি দোকানে গিয়ে তেল পেলেও ১ লিটারের দাম হাঁকানো হয়েছে ২ শ টাকা । কারণ জানতে চাইলে দোকানদার বলেন , ডিলাররা তেল দিচ্ছেনা । আমরা ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে গায়ের মূল্যের চাইতে বেশী দামে তেল ক্রয় করেছি । কারণ আমাদের স্থায়ী কিছু ক্রেতা রয়েছেন তারা অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে থাকেন । এজন্য আমাদেরকে তেল কিনে রাখতে হচ্ছে । তখন অন্য ক্রেতাদের কাছে আমাদেরকে নতুন দামে তেল বিক্রি করতে হচ্ছে ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :