April 28, 2024, 4:38 pm

হবিগঞ্জের বাহুবলে ক্যাপসিকাম আবাদে আব্দুস ছালামের সাফল্য

জেলার বাহুবল উপজেলার হাফিজপুর গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে প্রায় ২৫ শতক জমিতে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুস ছালাম।
তিনি পোকা দমনে ব্যবহার করেছেন হলুদ ফাঁদ ও ফেরোমন ফাঁদ। জমিতে প্রয়োগ করেছেন গোবর ও কিছু পরিমাণে সার। এসব ব্যবহার করায় ক্যাপসিকামের প্রচুর ফলন হয়েছে। রাসায়নিক ব্যবহার না করায় তার উৎপাদিত ক্যাপসিকাম বিষমুক্ত। এতে বাজারে তার ফসলের কদরও বেশি। আব্দুস সালামের সফলতায় আশে পাশের কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন ক্যাপসিকাম আবাদে।
আব্দুস ছালামকে রংপুর থেকে প্রায় ৯০০ ইন্ডিয়ান গ্রিন ব্ল্যাক ক্যাপসিকামের চারা সংগ্রহ করে দেন দ্বিমুড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শামিমুল হক শামীম। জমিতে এ চারা রোপণ করা হয় অক্টোবরের শেষে। প্রায় দুই মাস পরিচর্যা করার পর গাছে গাছে ফলন আসে। বিক্রি শুরু হয় জানুয়ারির প্রথম থেকে। শুরুতে প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। পরে ১৮০ থেকে ১৫০ টাকা দামে বিক্রি করেন। সামনে আরও ভাল দাম পাওয়ার আশা ওই কৃষকের।
আব্দুস ছালাম জানান, ক্যাপসিকাম চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। বাকি সময়ে আরও প্রায় ৫০ হাজার বিক্রি হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
আব্দুস ছালাম বলেন, কঠোর পরিশ্রম করায় ক্যাপসিকামের ভাল ফলন হয়েছে। ক্যাপসিকামের চাষ করতে আগ্রহী ছিলাম না। কৃষি কর্মকর্তা শামীম সাহেব রংপুর থেকে চারা সংগ্রহ করে দিয়ে পরামর্শ প্রদান করেন। এতে আগ্রহী হয়ে চাষ করে লাভবান হয়েছি। ভাল ফলন দেখে স্থানীয় কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক তৌহিদ মিয়া বলেন, ক্যাপসিকাম ফেসবুকে দেখেছি। এখানে এ ফসলটি নতুন। কৃষি বিভাগ থেকে আমাকে বলা হয়েছিলো, আমি চাষ করেনি। এখানে চাষ করে সফলতা পেলেন কৃষক আব্দুস ছালাম। তবে আগামীতে আমি ক্যাপসিকামের চাষ করতে আগ্রহী। তার মতো এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও একই কথা বলেন।
কৃষি কর্মকর্তা শামীম বলেন, কৃষক আব্দুস ছালামকে চারা এনে পরামর্শ দিয়েছি। মসলা উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় তিনি ক্যাপসিকাম চাষ করেন মালচিং পেপার দিয়ে। ফলন ভাল হওয়ায় সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুস ছালাম। এ সাফল্য দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
তিনি বলেন, ঝুরঝুরে বেলে দোআঁশ মাটি ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত। যদিও সব মৌসুমেই ক্যাপসিকাম চাষ সম্ভব। তবে চারা একটু বড় হলে শক্ত খুঁটি দিতে হবে যাতে হেলে না পড়ে যায়। এছাড়া গাছের গোড়ায় আগাছা থাকলে সেগুলো সাবধানে তুলে ফেলতে হবে। চারা বসানোর প্রায় দুই মাস পর থেকে অর্থাৎ চারা গাছ তিন মাস হলেই ফল দিতে শুরু করে, যা পরবর্তী এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত ফল দিতে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, খেয়াল রাখতে হবে, ক্যাপসিকামের পাতায় যেন রোগের উপদ্রব না হয়। সাধারণত, দুই ধরনের রোগ দেখা যায় ক্যাপসিকামে। এর একটি হলো পাতা কুঁকড়ে যাওয়া আর অন্যটি হলো পাতায় কালো দাগ হওয়া। জাব পোকা দলবদ্ধভাবে পাতার রস চুষে খায়, এ কারণে পাতা কুঁকড়ে যায়। এ থেকে রক্ষা পেতে নিম বীজের দ্রবণ অথবা সাবানপানি স্প্রে করা যেতে করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ লিটার পানিতে দুই চা চামচ গুঁড়ো সাবান গুলিয়ে ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, বাহুবলের কৃষকদের মধ্যে ক্যাপসিকামের চাষ ছড়িয়ে দিতে আমরা কজি করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :