April 19, 2024, 9:55 am

খুনের মামলার পলাতক আসামি আরাভের প্রথম স্ত্রী পুলিশ হত্যার আসামি মেহেরপুরের মেয়ে কেয়া

দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করে সারাদেশে আলোচনায় খুনের মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান। একজন পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলার অন্যতম আসামি তিনি। সম্প্রতি তার দোকান উদ্বোধন করেছেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বা দূর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েন, ভিডিওবার্তা দিয়েছেন দেশের অনেক তারকা।

আলোচিত সেই আরাভ খানের স্ত্রীর খোঁজ মিলেছে মেহেরপুরে। তার প্রথম স্ত্রীর নাম সুরাইয়া আক্তার কেয়া। কেয়া মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের মেয়ে। সে ওই পুলিশ হত্যা মামলার আসামি। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শাহিন নামের একজনকে বিয়ে করে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন কেয়ার বাবা আবুল কালাম আজাদ।

কেয়ার বাবা আবুল কালাম আজাদ জানান, কেয়ার মা তার খালাতো বোন। বাড়ি তার পাশের বাড়িতে। তার নাম মনোয়ারা বেগম। ১৯৯৬ সালে মনোয়ারার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এরপর থেকেই তাদের সংসার জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০০০ সালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একটি মামলায় জেল হয় আবুল কালাম আজাদের। তখন কেয়ার বয়স মাত্র ৩ বছর। মাঝে মাঝে মেয়েকে নিয়ে তাকে দেখতে যেতেন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। কিন্তু দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে তাদের সংসারে ফাটল ধরে। এরই মাঝে বড় হতে থাকে কেয়া। ২০১১ সালে জেল থেকে বের হয়ে আসেন আবুল কালাম। এসে শোনেন তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু কোনো

কিন্তু কোনো কাগজপত্র দেয়নি। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও পারেননি।
স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন বিয়ে করেন মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের এক হোমিও চিকিৎসকের সাথে। পরে তারা ঢাকায় চলে যান। ২০১৩ সালে এসএসসি পাশ করেন কেয়া। তার মা তাকে বাবার অমতে ভর্তি করে দেন ঢাকার একটি ম্যাটস কলেজে। সেখানে চিকিৎসা বিদ্যায় ডিপ্লোমা করতেন কেয়া। তারপর থেকেই মেয়ের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ ছিল না আবুল কালাম আজাদের।

তিনি আরো জানান, ঢাকায় ভর্তি হবার কিছুদিন পরই শুনতে পান তার মেয়ে সম্পর্কে জড়িয়েছে আপন (বর্তমান আরাভ খান) নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। সে নাকি জুয়েলারি ব্যবসায়ী। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তার সঙ্গে। ২০১৪ ও ১৫ সালে স্বামী আপনকে নিয়ে ২বার মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পিতার ভিটে গাঁড়াডোব গ্রামে তার খালার বাড়িতে বেড়াতে আসেন দু’জনে। তখন বিলাস বহুল জীবন যাপন করতো তারা। কিন্তু বিভিন্ন মারফত সে জানতে পারে তার মেয়ে ও জামায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। এরপরই কিছুদিন যেতে না যেতেই খবর আসে কেয়া একটি পুলিশ হত্যা মামলার আসামি। পরে জেলেও যেতে হয় কেয়াকে। এ সময় আপন তালাক দেয় তাকে। দীর্ঘ কয়েক বছর হাজত বাস করার পর ২০২২ সালে জামিনে মুক্তি পায় সে। পরে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শাহিন নামের এক যুবককে বিয়ে করেন কেয়া। তারপর পরই সে স্বামীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় চলে যান।

একই কথা জানান, গাংনী থানার এসআই জিল্লুর রহমান। তিনি জানান, কেয়া নামের ওই মেয়ের সম্পর্কে আমাকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছিল। আমি তার খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি, কেয়া এখন মালেশিয়ায় তার দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বসবাস করে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সুরাইয়া আক্তার কেয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছে পুলিশ। তার সম্পর্কে অনেকেই ভিন্ন ধরনের তথ্য দিচ্ছে। কেউ বলছেন, দুবাই আছে আবার কেউ বলছেন মালয়েশিয়া আছে। আমরা চেষ্টা করছি তার অবস্থান জানার।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :