April 20, 2024, 9:35 am

ঢাকার বায়ু দুষণের মান নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নের সুপারিশ পরিবেশবাদীদের

রাজধানীর বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত এক সেমিনারে তারা আজ একথা বলেন।
পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট রাজনীতিক রাজেকুজ্জামান রতন ও হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি। অনুষ্ঠানে “সর্বনাশা বায়ুদূষণের দায় ও নিয়ন্ত্রণের পথ অন্বেষণ” শীর্ষক ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: লেলিন চৌধুরী।
উপস্থাপিত ধারনাপত্রে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, “দ্রুত বায়ুদূষণ রোধ করতে হলে হাইকোর্টের নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরী।” তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বায়ুদূষণ রোধে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
২০২১সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্বের সর্বাধিক দূষিত নগরি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার প্রেক্ষিতে বায়ু দূষণ রোধে হাইকোর্ট প্রথমে নয় দফা নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে প্রথম নয় দফা নির্দেশ যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য আরো তিন দফা নির্দেশ প্রদান করেন। তিন দফা নির্দেশে বলা হয়, রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ, টঙ্গীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পানি ছিটানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকার রাস্তার ওপর থেকে পানি ছিটাতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে; যাতে রাস্তার পাশের ছোটখাটো গাছে জমে থাকা ধুলা-ময়লা পরিষ্কার হয়। এজন্যে পানির ঘাটতি তৈরি হলে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে পানি সরবরাহ করার জন্যও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দেয় আদালত।
ধারণাপত্রে বলা হয়, নিউইয়র্ক ভিত্তিক বায়ুমানের তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা এ্যাকুওয়েদার এর প্রতিবেদন অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে ঢাকার বায়ুর মান ক্রমশ: খারাপ হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এটি একটি অন্যতম দুষিত বায়ুর নগরী হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। এতে বলা হয়, গত ১০ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকার সর্বোচ্চ বায়ুমান একিউআই ছিল যথাক্রমে ৪৫১, ৪৭৪,৬৩৭, ৫৫৯,৩৬৩, ৪৭৯, ৩১৬, ২৩৩, ২৩৮,৩০৭ এবং ৩১৪। এতে বলা হয়, বায়ুমান একিউআই ০–৫০ ভালো, ৫১–১০০ মধ্যমমানের , ১০১–১৫০ সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১–২০০ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ হলো অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১+ হচ্ছে বিপদজনক।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, এই বায়ুমান সূচক অনুযায়ী ঢাকার বায়ুর মান এখন সর্বোচ্চ বিপদজনক অবস্থাও অতিক্রম করে গেছে। এতে করে শহরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিল রোগসহ জীবন বিপন্নকারী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
নগরাসীকে এই বিপদজনক অবস্থা থেকে রক্ষা করতে আলোচকরা হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বাণিজ্যিক, অফিস ও গার্হস্থ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বক্তারা দুষণ তৈরির সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠান,ব্যক্তি,নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে এ সমস্যার আশু সমাধানে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুপারিশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :