April 18, 2024, 6:53 pm

দেশেই উৎপাদিত হবে চাহিদার অর্ধেক ভোজ্যতেল

আগামী তিন বছরে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে তেলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ উৎপাদন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ দেওয়া উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তেলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিসচিব বলেন, বছরে দেশে ২৩ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিকটন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সরিষা, তিল, সানফ্লাওয়ারসহ অন্যান্য তেলবীজ থেকে আমরা মোট চাহিদার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩ লাখ মেট্রিকটন তেল উৎপাদন করি। বাকিটা আমদানি করতে হয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন তেলের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বলেছেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা উৎপাদিত তেল খেয়েছে। এখন কেন সেগুলো আমদানি করতে হয়? সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কৃষিমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নিয়েছি যে, আগামী তিন বছরে মধ্যে আমরা আমাদের ৫টি প্রধান তেলবীজ সরিষা, তিল, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী ও সয়াবিন এগুলোর উৎপাদন বাড়াব।
তিনি বলেন, আমাদের ম্লু সমস্যা হচ্ছে জমির। তেল হলো শীতকালীন ফসল। আবার শীতকালে বোরো, ডাল, সবজিও হয়। সেজন্য আমাদের সুযোগ কম। আমাদের ধানের উৎপাদনও কিছুতে কমানো যাবে না। সে সব বিষয় মাথায় রেখে ধানের অতিরিক্ত উপাদনশীল জাতের সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। পাশাপাশি আগাম জাতের বোরো করতে চাই। যাতে আমন ও বোরোর মাঝখানে আমরা একটু সময় ও জায়গা পাই ,যেখানে আমরা তেলবীজ জাতীয় ফসলগুলো উৎপাদন করতে পারব। আমাদের সাড়ে তিনশর মতো শস্য বিন্যাস রয়েছে। প্রধান শস্যের মধ্যে আমন ও বোরোর জন্য ২০ লাখ হেক্টরের মতো জায়গা আছে। এখন থেকে যদি আমরা ৫ লাখ হেক্টর জমি তেলবীজ জাতীয় ফসলের আওতায় আনতে পারি। তাহলে তেলের মোট চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ আমরা দেশীয় উৎপাদন থেকে মেটাতে পারব। এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আগাচ্ছি। প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উন্নত বীজ পাওয়া।
সচিব বলেন, প্রথম বছর আমরা ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে তেলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াব। এরপর আস্তে আস্তে তিন বছরে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে তেলবীজ জাতীয় ফসলের উৎপাদন করা হবে। তাহলে আমরা চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ উৎপাদন করতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে ১৩টি জায়গা থেকে পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রথম বছর ব্লক ভিত্তিক যে পরিকল্পনা সেখানে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে করছি। এখান থেকে যে বীজ পাব তা দিয়ে ১০ গুণ জমিতে চাষ করতে পারব। আমরা উন্নত বীজ ও অতি উচ্চ ফলনশীল জাত রিপ্লেস করব। আগে সরিষার যে জাত ছিল, সেটার ফলন কমছিল। সেখানে বারি সরিষার ১৪ ও ১৭ জাতের ফলন প্রতি বিঘাতে ৭ মণ অর্থাৎ আগের থেকে প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। এমন কি চারগুণ ফলনশীল জাতও আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা এভাবে পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছি। যাতে করে ক্রমান্বয়ে নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :