April 18, 2024, 4:20 pm

নার্স ও রেলকর্মীদের পর যুক্তরাজ্যে এবার ধর্মঘটে যাচ্ছেন শিক্ষকরা

অনলাইন ডেস্ক।
নার্স ও রেলকর্মীদের পর যুক্তরাজ্যে এবার ধর্মঘটে যাচ্ছেন দেশটির শিক্ষকরা। শিক্ষকদের সংগঠন দ্য ন্যাশনাল ইডুকেশন ইউনিয়ন (এনইই) এরই মধ্যে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শিক্ষকরা আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে সাতদিন ধর্মঘট পালন করবেন।

এনইইউর ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি এবং ১৫ ও ১৬ মার্চ এ তিনদিন দেশজুড়ে ধর্মঘট পালন করা হবে। এছাড়া আঞ্চলিকভাবে ধর্মঘটের পৃথক পৃথক তারিখ ঘোষণা করা হবে। প্রায় ৩ লাখ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মী এনইইউর এ ধর্মঘটে সমর্থন দিয়েছেন। একযোগে সবাই এ ধর্মঘটে যোগ দিলে এটা এ যাবৎকালের অন্যতম বড় ধর্মঘট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যে সাতদিন ধর্মঘট হবে ওই দিনগুলোতে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে শিক্ষকদের এ ধর্মঘটের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সরকারকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।

বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। সেই লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে শিক্ষকদের শীর্ষ সংগঠন এনইইউ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন সরকারের শিক্ষামন্ত্রী।

যুক্তরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধর্মঘট চলছে। ১৯ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবিতে গত ১৫ ডিসেম্বর এ ধর্মঘট শুরু হয়। ইংল্যান্ডের প্রায় এক-চতুর্থাংশ হাসপাতাল ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সব স্বাস্থ্য বোর্ড এ ধর্মঘটে অংশ নিয়েছে। এছাড়া ওয়েলসের নার্সরাও এ ধর্মঘটে অংশ নিয়েছে। তবে স্কটল্যান্ডে এ ধর্মঘট হচ্ছে না।

বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন দেশটির রেলকর্মীরাও। চলতি বছরের শুরুতেই (৪ জানুয়ারি) ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। বিষয়টি সুরাহার জন্য সরকার ও রেলকর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এবার সেই সঙ্গে যোগ হচ্ছে শিক্ষকদের ধর্মঘট।
এদিকে জনসমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ঠেকাতে পুলিশকে আরও বেশি ক্ষমতা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তিনি এ সংক্রান্ত একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করতে যাচ্ছেন। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের তরফ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মূলত নতুন বিলে গত বছর পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি আইনের সংশোধনের প্রস্তাব থাকছে। এর ফলে জনদুর্ভোগ করে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের ক্ষমতা আরও বাড়বে।

নতুন এ সংশোধনীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, বিক্ষোভ করার অধিকার আমাদের গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি; কিন্তু এটি একচেটিয়া অধিকার নয়। নাগরিকের অধিকার ও কঠোর পরিশ্রমী সংখ্যাগরিষ্ঠদের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার অধিকারের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সাধারণ জনগণের জীবনকে ব্যাহত করে একটি ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু দ্বারা পরিচালিত প্রতিবাদ করতে দিতে পারি না। এটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং আমরা এটি শেষ করতে যাচ্ছি।

সুনাকের এ প্রস্তাব এমন সময় এসেছে যখন যুক্তরাজ্যে অর্থনৈতিক অস্থিরতায় বিভিন্ন শহরে ছোট-বড় বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে। বিশেষ করে লন্ডনে সম্প্রতি চিকিৎসা ও রেলকর্মীদের ধর্মঘট ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে সরকারি ও জলবায়ু কর্মীরাও সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য রাস্তায় নামছেন। এসব বিক্ষোভ-প্রতিবাদের বেশিরভাগই রাস্তা বন্ধ করে সংঘটিত হচ্ছে। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোও প্রায়ই বন্ধ হয়ে পড়ছে। ঋষি সুনাকের বিলটি পার্লামেন্টে পাস হলে এসব বিক্ষোভে শক্তি খাটাতে আরও ক্ষমতা পাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :