April 20, 2024, 3:50 am

ফরাসি রাষ্ট্রদূতের কাছে আফগানিস্তানের জুজি

অনলাইন ডেস্ক।।
আফগান বালিকা আলিয়ার পোষা ময়না পাখি হচ্ছে জুজি। তালেবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর কাবুল ছাড়তে বাধ্য হয় আলিয়ার পরিবার। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আলিয়াকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয় জুজির কাছ থেকে।

আলিয়াদেরকে প্রথমে কাবুল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের সরিয়ে নেয়া হয়। সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে ফ্রান্সের প্যারিসে পাড়ি দেয় তারা। তবে বিমানে ওঠার আগে বাধে বিপত্তি। আবুধাবি থেকে ফ্রান্সের উদ্দেশে রওনা দেয়ার সময় জুজির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয় আলিয়াকে। ইচ্ছা থাকলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়মের প্রতিবন্ধকতায় জুজিকে বিমানে তোলার অনুমতি পায়নি সে।
আলিয়ার কষ্ট বুঝতে পেরে এগিয়ে আসেন আবুধাবিতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেভিয়ার চ্যাটেল। জুজিকে বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। সেখানেই নতুন আশ্রয় খুঁজে পায় জুজির ময়না পাখিটি। আস্তে আস্তে ফরাসি শব্দও শিখতে শুরু করেছে সে। জেভিয়ার চ্যাটেল কথা দিয়েছেন, আলিয়া আর জুজিকে আবারও একত্র করতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি।

ফরাসি রাষ্ট্রদূত জেভিয়ার চ্যাটেল টুইটে বলেন, আল দাফরা বিমানঘাঁটিতে ছোট্ট একটি মেয়েকে ময়না পাখি নিয়ে আসতে দেখেন তিনি। মেয়েটি ভীষণ ক্লান্ত ছিল। পাখিটি সঙ্গে থাকায় কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশে অনেকেই তাকে বাধা দেয়। তবু হাল ছাড়েনি আলিয়া। পাখিটিকে বিমানে ওঠার অনুমতি দেয়া হবে না—এমন কথা শুনে আলিয়া কাঁদতে শুরু করে। চ্যাটেল বলেন, তিনি আলিয়াকে কথা দেন পাখিটিকে বাসায় নিয়ে যাবেন। যত্ন নেবেন। আলিয়াকে এমনও বলেন, সে চাইলে যেকোনো সময় জুজিকে দেখতে আসতে পারে।
আলিয়াকে দেয়া কথা রেখেছেন জেভিয়ার চ্যাটেল। পাখিটির জন্য একটি খাঁচা কিনেছেন। নিয়ম করে তাকে খাওয়ান। সকালে তাকে বাইরে বেড়াতেও নিয়ে যান তিনি, যেন জুজির সঙ্গে অন্য পাখিদের দেখা হয়। চ্যাটেল বলেন, ‘জুজি ধীরে ধীরে পোষ মানতে লাগল, অনেক কথা বলতে শুরু করল। যে ভাষায় ও কথাগুলো বলত, তা আমাদের বোধগম্য ছিল না।’

মানুষের ভাষা অবিকল অনুকরণের সক্ষমতার জন্য ময়না পাখি খুব পরিচিত। সে কথা চ্যাটেলেরও জানা আছে। এ জন্য জুজিকে কিছু ফরাসি ভাষা শেখানোর চেষ্টা করছেন তিনি। প্রথমেই তিনি শিখিয়েছেন ‘বনজোর’ শব্দটি। এর অর্থ হলো ‘হ্যালো’। জুজিকে লালন–পালনের শুরুর দিকের কথা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত চ্যাটেল। বলেন, পুরুষদের পছন্দ করত না জুজি। ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকাত। তবে নারীদের দেখলে সে খুশি হতো। ধীরে ধীরে পাখিটি পোষ মানতে শুরু করে। সূত্র : দ্য ন্যাশনাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :