আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছাগল চুরির অপবাদে আটক, চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে কিশোরের আত্মহত্যা!

নীলফামারীতে ছাগল চুরির অপবাদে কিশোরকে আটক করা হয়। অতঃপর পরনের শার্ট দিয়ে ফ্যানে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বিপ্লব ইসলাম (১৭) নামের ওই কিশোর। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ হাটে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নর চৌধুরীপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছড়ি গ্রামের নিতাই নন্দীর একটি ছাগল (খাসি) সোমবার বিকেলে হারিয়ে যায়। খুঁজতে গিয়ে নিতাই নন্দী রামগঞ্জ হাটে এসে মাংস ব্যবসায়ী সহিদুল ইসলামের হাতে ছাগলটি দেখতে পায়। ওই ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কেনার কথা জানালে তাঁর মাধ্যমে বিক্রেতা বিপ্লব ইসলামকে শনাক্ত করে এবং তাঁকে (বিপ্লব) স্থানীয় ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীর কাছে নিয়ে যায়। ইউপি সদস্য বিপ্লবকে ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নরেন চন্দ্র রায়ের কাছে সোপর্দ করেন। গ্রাম পুলিশ ওই হাটে অবস্থিত টুপামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকিরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে চলে যান। সন্ধ্যায় এসে দেখতে পান বিপ্লব পরনের শার্ট খুলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
বিপ্লবের দুলাভাই জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, চুরির অপবাদে আটক করার পর তারা আমার শ্যালককে পুলিশে দিতে পারতেন। তা না করে কেন তারা তাকে একা একটি ঘরে আটকে রাখলেন। এখন আত্মহত্যা করলেও এ দায় তাদেরকেই নিতে হবে। আমার শ্বশুর চট্টগ্রামে ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এলে মামলার বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বলেন, ঘটনা শুনে বিপ্লবকে গ্রাম পুলিশ নরেন চন্দ্র রায়ের হাতে দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, হাটের ইজারাদার এবং বিপ্লবের অভিভাবককে খবর দিতে বলি। পরে ছেলেটির আত্মহত্যার খবর শুনতে পাই। তাকে তালাবদ্ধ করে রাখার বিষয়টি জানা ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
গ্রাম পুলিশ নরেন চন্দ্র রায় বলেন, মেম্বারের নির্দেশানায় চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ছেলেটিকে তালাবদ্ধ করে রেখে চাবি চেয়ারম্যানের ছেলের কাছে দিয়েছি। পরে জানতে পারি ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে।
টুপামারী ইউপি চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকির বলেন, সোমবার বিকেলে আমি কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ছিলাম। সে সময় রামগঞ্জ হাটে আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বিপ্লবকে আটকে রাখার বিষয়ে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। সন্ধ্যায় বাড়ি এসে ওই ছেলেটির আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারি।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ উন নবী বলেন, আমরা জিডির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :