আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘আমরা কাজিপুর‘ সামাজিক সংগঠনের পোস্টা প্রকাশ

মিজানুর রহমান মিনু কাজিপুর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি।।
১৯৫২ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর নতুন মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। এই দিনে ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আমাদের ভাষা আন্দোলনকে পৃথিবীর মানুষের গৌরবিত উত্তরাধিকারে রূপান্তরিত করেছে।
২০০০ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি তেমনি পালিত হচ্ছে পৃথিবীজুড়ে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেবল বাংলা ভাষাই নয়, গোটা বাংলাদেশ আর বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল সব ইতিহাসই এখন উঠে আসবে বিশ্ব-মানুষের সামনে। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা আমাদের জাতিগত পরিচয় এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে আরো গৌরবোজ্জ্বল ও মহীয়ান করেছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ উপলক্ষে বিশেষ পোস্টার প্রকাশ করেছে সামাজিক সংগঠন আমরা কাজিপুর।
দৃষ্টিনন্দন এই পোস্টারে ভাষার মাধ্যমে ভ্রাতিত্ব ও ভালবাসার নিবিড় সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।পোস্টারের ক্যাপশনে বলা হয়েছে ‘ভাষা বেচে থাকুক আমাদের আদরে আর ভালবাসায়।‘এছাড়াও পোস্টারে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় এর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
পোস্টার প্রকাশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী মো. জাকিরুল ইসলাম জানান-১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের সভায় ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ২০০০ সাল থেকে সারাবিশ্বে দিবসটি পালিত হচ্ছে।সেই প্রেক্ষিতে আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে নতুন প্রজন্মকে আরো দায়িত্বশীল করার প্রত্যাশায় আমাদের এই প্রয়াস।
আশা করি উত্তর সিরাজগঞ্জের জনপথের মানুষ ভাষা শহীদদের প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল হবেন। তিনি আরো জানান দুই ধরনের মোট নয় হাজার পোস্টার ছাপানো হয়েছে এবং তা সিরাজগঞ্জ শহরসহ উত্তর সিরাজগঞ্জের ১৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের লাগানো হবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমরা কাজিপুর এর পোস্টার প্রকাশনা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় বলেন- মাতৃভাষাকে ছড়িয়ে দিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বিশেষভাবে জরুরি। জনসাধারণকে ভাষা শহীদদের আত্নত্যাগের মহিমা সম্পর্কে আরো উদ্বুদ্ধ করতে হবে।সামাজিক সংগঠন গুলো তাদের দায়িত্ব পালনে আরো বেশী করে এগিয়ে আসার আহবান জানান। সেইসাথে তিনি আমরা কাজিপুর এর সকল উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান এমন একটি পোস্টার প্রকাশ করার জন্য।
কাজিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংগঠনের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান সিরাজী বলেন- বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর বাঙালি জাতির জীবনে এমন গৌরবোজ্জ্বল অর্জন আর ঘটেনি। ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক-সালাম-বরকতরা এখন বিশ্ব মানুষের গৌরবিত অহংকার।
পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন জাতিসত্তার মাতৃভাষা নিয়ে তৈরি হবে নতুন সচেতনতা। পৃথিবীর মানুষের সামনে আকাশছোঁয়া উচ্চতায় উঠে যাবে রফিক-সালাম-বরকতরা-একুশের ভোরে বিশ্বজুড়ে ঐক্যতান উঠবে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।
এমন পোস্টার প্রকাশ করায় তিনি আমরা কাজিপুর কে ধন্যবাদ জানান।
সংগঠনের উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. ফজলুল করিম, মো. নাছিরউদ্দিন যুবায়ের, প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান, প্রকৌশলী মো. মোশারফ হোসেন, ছাব্বির আহমেদ, মো. গিয়াসউদ্দিন, শাব্বির আহমেদ তামিম কাজিপুরবাসিকে মহান ভাষা দিবসে আত্নত্যাগের মহিমায় মানব কল্যানে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তারা মনে করেন- ভাষার হারিয়ে যাওয়া মানে একটা সংস্কৃতির হারিয়ে যাওয়া এবং সভ্যতার অপমৃত্যু। তাই ভাষার মর্যাদায় সবাইকে যত্নশীল হওয়ার তাগিদ দেন।