অনলাইন ডেস্ক।
ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে ১৮ লাখ মানুষই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) এর সঙ্গে সমন্বিতভাবে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর পরিচালনায় করা একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, দুই কোটির বেশি জনসংখ্যার শহর ঢাকার বাসিন্দাদের ৯ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ লাখ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকার বস্তিগুলোতে বসবাস করা বাসিন্দাদের মধ্যে ৬ শতাংশই করোনায় আক্রান্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার ৫০৮ জন যার মধ্যে ২৫ শতাংশের কিছুটা বেশি অর্থাৎ ৭১ হাজার ১৮৫ জন ঢাকার বাসিন্দা। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানেরই চালানো নতুন এই গবেষণার ফলাফল বলছে, আক্রান্তের সংখ্যা এর বহুগুণ।
ইউএসএআইডি এবং বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় চালানো এই গবেষণা, গত ১৮ এপ্রিল থেকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চালানো হয়।
গবেষণার জন্য ৩ হাজার ২২৭টি বাসায় জরিপ চালানো হয় যেখানে ২১১ জন উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৯৯ জন পিসিআর মেশিনে তাদের করোনা পরীক্ষা করান।
উপসর্গ রয়েছে এমন বাড়ি থেকে উপসর্গবিহীন ৪৩৫ জনের মধ্যে ২০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। উপসর্গবিহীন বাড়ি থেকে ৮২৭ জনের মধ্যে থেকে ৫৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া রাজধানীর ছয়টি বস্তি এলাকার ৭২০ বাড়ি থেকে পৃথক নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
জরিপে দেখা গেছে, যেসব বাড়িঘর পরিদর্শন করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনার উপসর্গ পাওয়া গেছে। মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশের মধ্যে উপসর্গ পাওয়া যায়। যত সংখ্যক বাড়ি পরিদর্শন করা হয়েছে তার ভিত্তিতে শতকরা ৯ শতাংশ করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর আদমশুমারি শাখার পরিচালক জাহিদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় দুই কোটি। সেক্ষেত্রে গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী ঢাকার ১৮ লাখ বাসিন্দা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, তা আড়াই লাখ পেরিয়ে যায় গত ৭ অগাস্ট। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
Leave a Reply