April 26, 2024, 5:01 pm

ছাত্রের মারধরে আহত সেই শিক্ষক মারা গেছেন

সুচিত্রা রায়,স্টাফ রিপোর্টার:

আশুলিয়ায় বখাটে শিক্ষার্থীর মারধরে গুরুতর আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহত শিক্ষকের মরদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ জুন) ভোর সোয়া ৫ টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সকাল ৮ টার দিকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিহত শিক্ষক উৎপল সরকার (৩৫) সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃংখলা কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী হলেন আশরাফুল ইসলাম জিতু (১৬)। সে চিত্রশালাই এলাকার উজ্জ্বল হাজীর ছেলে ও একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। গত শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ২ টার দিকে ওই স্কুল মাঠে শিক্ষককে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে জিতু।
জানা যায়, নিহত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। যে কারনে সকল ছাত্রদের সকল আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতে হতো তার। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচারও তিনিই করতেন।

এর আগে তিনি হামলাকারী জিতুকেও শাসন করেছিলেন। ফলে কলেজ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে কলেজ মাঠপ্রাঙ্গনে এহামলার এঘটনা ঘটায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা শিক্ষকের প্রতি ওই শিক্ষার্থীর ক্ষোভ ছিল।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতুসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, আমরা প্রতিবছর ছেলেদের ফুটবল ও মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করি। এবারও এই আয়োজন করা হয়েছিল। গত শনিবার মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। এসময় প্রতিষ্ঠানের দুই তলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেরা খেলা দেখছিল। ওই শিক্ষার্থীও দুই তলায় খেলা দেখছিল। সকাল থেকেই তার হাতে স্ট্যাম্পটি ছিল বলে জানতে পেরেছি। হঠাৎ সে দুই তলা থেকে নেমে মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই আজ ভোর সোয়া ৫ টার দিকে মারা যান।

নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উশৃঙ্খলার কারনে শাসন করায় ওই ছাত্র আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে এর উপযুক্ত বিচার চাই।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) এমদাদুল হক বলেন, নিহত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থাকায় নিয়ম কানুন মানাতে সকল শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন। তিনি জিতুকেও শাসন করায় এঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত জিতুসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :