April 25, 2024, 2:29 pm

নির্বাচন কমিশন গঠনে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

এখন থেকে ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশনার নিযুক্তিতে প্রধানমন্ত্রী এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অংশ নিতে পারবেন বলে ঐতিহাসিক এক রায় দিয়েছে দেশটির শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত দ্বিদলীয় এই প্যানেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।

দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফ নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। এই রায়ের মধ্যে দিয়ে ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশনার নিযুক্তিতে সরকারের দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র ক্ষমতা চর্চার অবসান ঘটেছে।

ভারতের নির্বাচন কমিশন একটি স্বায়ত্তশাসিত সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হলেও দেশটির বিরোধী দলগুলো নিয়মিত এই সংস্থাকে ক্ষমতাসীন দলের নির্দেশনা অনুযায়ী চলে বলে অভিযোগ করেছে। যদিও দেশটির স্বায়ত্তশাসিত সাংবিধানিক এই সংস্থা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সর্বোচ্চ আদালত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশনার নিযুক্তির জন্য দ্বিদলীয় যে প্যানেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে; তাতে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষের বিরোধীদলীয় নেতা বা সংসদে সর্বোচ্চসংখ্যক সদস্যের বিরোধী দলকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য স্বতন্ত্র কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া একাধিক পিটিশনের শুনানির পর আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ওই আদেশ দিয়েছে। রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি কে এম জোসেফ বলেন, এই বিষয়ে সংসদ কর্তৃক একটি আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন বিধি চালু থাকবে।

‘ভারতের নির্বাচন কমিশনকে কার্যনির্বাহী বিভাগের সকল প্রকার পরাধীনতা আর হস্তক্ষেপ থেকে দূরে থাকার কঠিন ও অপ্রতিরোধ্য কাজটি সম্পাদন করতে হবে।’

বর্তমানে ভারতের প্রেসিডেন্ট, যিনি মূলত সরকারের আদেশ মেনে চলেন, তিনিই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুই কমিশনারকে ছয় বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত করেন। ভারতে আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করার এই চর্চা কয়েক দশকের পুরোনো।

নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করার পুরোনো এই বিধি বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থে হওয়া পিটিশনের পক্ষে লড়াই করা আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য একেবারে অপরিহার্য এবং সেই স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য, আপনি এমন একটি ব্যবস্থা রাখতে পারবেন না; যেখানে সরকার একা নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেয়।’

ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরাইশি বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত দাবি অবশেষে পূরণ হচ্ছে।’ সুপ্রিম কোর্টকে উল্লেখ করে টুইটারে এক টুইটে তিনি বলেন, অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে জয় হয়েছে। দুই দশক ধরে দাবিটি ঝুলে আছে বলে টুইটে লিখেছেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :