April 19, 2024, 12:04 pm

পালকিতে করে বউ আনতে গেলেন দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা

সাংবাদিক ইমরান নাজিরঃ
পালকিতে চড়ে বউ আনলেন বর। পালকিতে হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যের স্মারক পালকিতে বরযাত্রা দেখতে এ সময় বিয়েবাড়ি ও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ভিড় করে উৎসুক মানুষ। আজ শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের আরামডাঙ্গা গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রায় এমন দৃশ্য দেখা যায়। উপজেলার আরামডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছোট ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা বিশ্বাসের সাথে একই গ্রামের মোঃ শাহিন মন্ডলের মেয়ে শারমিন আক্তার শান্তর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল এদিন। চার বেহারার পালকিতে চড়ে বর গেলেন বিয়েবাড়িতে। পালকি চড়ে বউ আনার কথা শুনে আগে ভাগেই গ্রামের উৎসক নারী – পুরুষ এদিন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো দেখার জন্য এবং মোবাইলে বন্দি করে অভিনব বিবাহ অভিযান। এমন আয়োজনের কথা জানিয়ে রানার বন্ধুরা বলেন বর-কনের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় স্বল্প দূরত্ব পাড়ি দিতে পালকিতে বরযাত্রার ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। অনেক বছর পরে পালকিতে বরযাত্রা দেখে ভালো লাগল। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য রক্ষায় চেষ্টা করা দরকার। আগে বিয়ের বাজারে বাহন হিসেবে পালকির কোনও জুড়ি ছিল না। তারপর মোটর গাড়ির গতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে পালকি পাড়ি দিচ্ছিল ইতিহাসে। মানুষের রুচি, চাহিদা সবই সময়ের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে। সকলেই চাইছেন এক্সক্লুসিভ কিছু করতে। পুরনোকে ফিরিয়ে আনতেও তাই পিছপা হচ্ছেন না অনেকেই। আর সেই কারণেই বিয়েতে ফের চাহিদা বাড়ছে পালকির। যেন আশপাশের এলাকার লোকও বলাবলি করেন হ্যাঁ বিয়ে একটা হল বটে। রানা তার নিজের বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে পালকিতে করে বিয়ে করতে গেলো। রানার বন্ধুরা তার বিয়ের বিষয়ে আরো বলেন, পালকিতে চড়ে বিয়ে হবে এটা স্বপ্নের ব্যাপার। স্বপ্নটা সত্যি হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে। কারণ আজকাল পালকির ব্যবহার আগের মতো নেই। এ কারণে বেশ আনন্দ লাগছে। ছোট থেকেই রানার স্বপ্ন ছিলো পালকিতে করে কন্যা বাড়ি যাওয়া এবং বউকে পালকিতে করে বাড়ি নিয়ে আসা। সেই স্বপ্নটা আজ পূর্ণ হলো তার। তবে গোটা এলাকায় পালকিতে করে বিয়ে দীর্ঘ বছর দেখা যায়নি। তাই অলি গলি, চায়ের দোকান, বাড়ি বাড়ি, রাস্তা ঘাটে পালকিতে করে বিয়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিলো। রানার বড় ভাই পিতৃতুল্য ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, চাচা-মামাদের পাশাপাশি বন্ধু এবং রাজনৈতিক ছোট-বড় ভাইদের এই সহোযোগিতায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এই পালকি বিয়ের অসামান্য এই অবদানের কথা দীর্ঘদিন মনে রাখবে এই অঞ্চলের মানুষ। রাস্তা ঘাটে অনেকের মুখে আলোচনা ছিলো যে পালকিতে করে বিয়ে মনে হয় একশত বছরেও এলাকাতে দেখা যায়নি। রানা এলাকায় ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :