ফুটবল সুপারস্টার আর্জেন্টিনাইন লিওনেল মেসি বলেছেন, পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে তার কোন সমস্যা নেই। আর্জেন্টিনার ক্রীড়া বিষয়ক দৈনিক ওলে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেছেন, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
আর্জেন্টাইন জনপ্রিয় পত্রিকাটিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় মেসির প্রতি প্রশ্ন ছিল ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে তার অংশগ্রহনের সম্ভাবনা আছে কিনা। কাতার বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলা পিএসজি সতীর্থ এমবাপ্পের সঙ্গেও তার সম্পর্কের বিষয়টি জিজ্ঞেস করা হয়। জবাবে মেসি বলেন. এমবাপ্পের সঙ্গে খেলা শেষে আমার কথা হয়েছে। সেটি উৎসবের পরই শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হ্যাঁ আমরা ম্যাচ ও বিশ্বকাপ পরবর্তী উৎসব নিয়ে কথা বলেছিলাম। আর্জেন্টিনায় জনগণ কি করেছে, আমি কখন ছুটি কাটিয়েছি .,।’
মেসি বলেন, এর বেশী আর কিছুই হয়নি। আমার সঙ্গে তার সবকিছুই ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে। বিশ্বকাপে হারের অভিজ্ঞতাও বর্ননা করেন মেসি। বলেন,‘ আমি মুদ্রার অপর পিঠ ও দেখেছি। ২০১৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরেছিলাম। তবে ম্যাচের পর কি ঘটেছে সেটি আমি শুনতে চাইনি। বাস্তবতা হচ্ছে ফরাসি ফরোয়ার্ডের সঙ্গে আমার কোন সমস্যা হয়নি।’
পরবর্তী বিশ্বকাপে অংশগ্রহন প্রসঙ্গে মেসি বলেন, ‘বয়সের কারণে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য কঠিন। আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি, খেলাটা আমি উপভোগ করি, যদি শারীরিকভাবে ফিট থাকি, তাহলে চালিয়ে যাব। পরবর্তী বিশ্বকাপ এখনো দেরি আছে। আমার ক্যারিয়ার কোন দিকে যাচ্ছে, এর ওপর নির্ভর করছে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে আর্জেন্টিনার ভৌগোলিক দূরত্ব প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার। কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে আলবিসেলেস্তাদের নিয়ে বাংলাদেশের উন্মাদনা আর্জেন্টিনা তো বটেই, নজর কেড়েছে সারা বিশ্বের।
আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের টুইটার পেজে বাংলাদেশকে নিয়ে একাধিক পোস্ট করা হয়। এ ছাড়া অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানান আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালনি।
আর্জেন্টিনা দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির কানেও গিয়েছে বাংলাদেশের উন্মাদনার কথা। এবার বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা এবং নিজের পাগলাটে সমর্থকদের নিয়ে কথা বলেছেন মেসি।
বিশ্বকাপের শিরোপা জয় নিয়ে আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম ওলে পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কাতার বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা (বাংলাদেশের সমর্থন) আমার চোখে পড়েছে। সব জায়গায় ১০ নম্বর জার্সি, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে সোফি মার্টিনেজ (আর্জেন্টাইন সাংবাদিক) আমাকে সব দেখিয়েছিল। আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি এভাবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে দেখা, সত্যিই দুর্দান্ত ব্যাপার।’
এ সময় মেসি আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপের সময়ে আর্জেন্টিনার সাধারণ মানুষ অনেক উপভোগ্য সময় কাটিয়েছে। তারা তাদের দুঃখ-দুর্দশা ভুলে এ সময়ে শুধু ফুটবল নিয়ে ভেবেছে।’
বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালনি বাংলাদেশকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয়, প্রথমে দিয়েগো (ম্যারাডোনা), পরে মেসির কারণে আর্জেন্টিনার ফুটবলের সমর্থক বেড়েছে। বাংলাদেশে আমাদের এমন সমর্থন আছে জেনে আমি গর্বিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্য অনেক দেশের মানুষও আমাদের সমর্থন করে।’
আলবিসেলেস্তাদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে আর্জেন্টাইনদের। বিশ্বকাপ চলাকালে আর্জেন্টিনার ম্যাচের সময় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এতে হাজার হাজার মানুষ আর্জেন্টিনার ম্যাচ উপভোগ করেন এবং মেসি-ডি মারিয়াদের সমর্থনে গলা ফাটান। বিশ্বকাপের শুরু থেকে বিষয়টি আর্জেন্টিনার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এতে আর্জেন্টাইনরা আপ্লুত হয়ে রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে ছিলেন।
Leave a Reply